ভিক্ষুকের কোলে ছয় মাসের শিশুকে রেখে গেলেন এক মা। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ঘটনার একদিন পর মাকে পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) রাতে শিশুটির মা ও স্বজনরা সদর মডেল থানায় এসে পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানায়।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ, পুলিশ মহিলা কল্যাণ সমিতির জেলা সভাপতি সেলিনা মাহফুজ, পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিওয়ান) কর্মকর্তা মোঃ আজিজুর রহমান, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। শিশুটির মা ও দাদা হাফিজ উল্যার সঙ্গে কথা বলেছেন জেলা পুলিশ সুপার।
এসপি মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, আমরা এখনই শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করছি না। আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে। শিশুটি বেলাল হোসেন ও নিশি আক্তার দম্পতির হেফাজতে রয়েছে।
শিশু মাহিন রামগতি উপজেলার চরবাদম ইউনিয়নের চরসিতা গ্রামের সৌদি প্রবাসী মিরন হোসেনের ছেলে। মিরন-সুরমা দম্পতির সংসারে আরও ৩ মেয়ে রয়েছে। তারা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাঞ্চানগর এলাকায় ভাড়ায় থাকেন।
স্বজনরা জানায়, শিশুটির বাবা মিরন দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন। 4 বছর আগে তিনি এসে ধার-দেনা নিয়ে বাড়িটি তৈরি করেন। প্রায় ৭-৮ মাস আগে তিনি সৌদি চলে যান। কিন্তু তিনি ঠিকমতো ঋণ পরিশোধ করেননি। ঋণ পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন স্ত্রী সুরমা। মোবাইল ফোন নিয়ে স্বামীর সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
সুরমা বেগম জানান, তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ চরমনসা গ্রামের মিয়ারবেড়ি এলাকায়। বুধবার (১ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে সে তার বাবার বাড়ি থেকে বাসে করে লক্ষ্মীপুর শহরের বাঞ্চানগর এলাকায় ভাড়া বাসায় আসছিল। তিনি বাস থেকে শিশুটিকে নিয়ে লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পৌরসভার মজুপুর এলাকায় আধুনিক হাসপাতালের সামনে নামেন। এর আগে ধারের টাকা পরিশোধ নিয়ে বাসে স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা কাটাকাটি হয়। দুশ্চিন্তায় তিনি শিশুটিকে ভিক্ষুকের কাছে রেখে যান। শিশুটিকে তিনি ভোলেননি।
পরে শিশুটিকে ভিক্ষুক সালমা বেগমের কাছ থেকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন মাহমুদের ভাই বেলালের পরিবারের জিম্মায় রাখা হয়।


0 coment rios: